জৈব পদার্থগুলো পচনের ফলে যে বিভিন্ন গ্যাস পাওয়া যায় তার একটি মিশ্রিত রূপ হচ্ছে বায়োগ্যাস এবং সাধারণভাবে কৃষি বর্জ্য, জৈব সার, পৌর বর্জ্য, উদ্ভিদ সৃষ্ট উপকরণ, নর্দমার বর্জ্য, সবুজ বর্জ্য বা খাদ্য বর্জ্য ইত্যাদি কাঁচামাল হতে বায়োগ্যাস উৎপন্ন হয়। বায়োগ্যাস প্লান্ট হতে শুধু যে রান্নার জন্য গ্যাস পাওয়া যায় তাই নয়, এ থেকে শস্য ও মাছের পুকুরের জন্য জৈব সারও মেলে। বাংলাদেশে ১৯৭২ সালে প্রথম বায়োগ্যাস প্লান্ট নির্মাণ করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক এর নন ব্যাংক ফাইনান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন হিসেবে “ইডকল” বায়োগ্যাস সেক্টরে বিনিয়োগ করে থাকে। এছাড়াও বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর), GIZ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উদ্যোগে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত সারাদেশে সর্বমোট ৭৬,৭৭১ টি বায়োগ্যাস প্লান্ট নির্মাণ করা হয়েছে। সমগ্র বাংলাদেশে বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট নির্মাণের জন্য কিছু সক্রিয় কর্মসূচী ও প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। এগুলোর মধ্যে পোলট্রি বর্জ্য ভিত্তিক বায়োগ্যাস প্লান্টগুলোই সর্বাপেক্ষা সফল হয়েছে। এগুলো থেকে প্রাপ্ত গ্যাস দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায় এবং এভাবে প্রাপ্ত গ্যাস দিয়ে সর্বাধিক প্রায় অর্ধ মেগাওয়াট পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা হচ্ছে। বিস্তারিত নিম্নোক্ত লিংকে পাওয়া যাবে- https://www.renewableenergy.gov.bd/index.php
চিত্রঃ বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট
নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ২০২১ সালের মধ্যে ৩১.০৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বায়োগ্যাস/ বায়োমাস থেকে উৎপাদনে স্রেডা’র উদ্যোগে সরকারী এবং বেসরকারী পর্যায়ে বায়োমাস/বায়োগ্যাস, ডেইরি ও পোলট্রি বর্জ্য, মিউনিসিপালিটি বর্জ্য, কসাইখানার বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। যেহেতু সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী ২০২০ সালের পর কোন গৃহস্থালীতে নতুনভাবে প্রাকৃতিক গ্যাস সংযোগ থাকবে না সেহেতু বায়োগ্যাস ব্যবহার করে রান্না বা গৃহস্থালীর অন্যান্য ব্যবহার আর্থিকভাবে সম্ভাবনাময়। তবে এসব ক্ষেত্রেও বায়োগ্যাস উৎপাদনের পর বর্জ্য (Slurry) ব্যবস্থাপনা একটি বড় চ্যালেঞ্জ যা বায়োগ্যাস গাইডলাইনে সুষ্ঠুভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। স্রেডা’র উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ১৩ সদস্য সমন্বয়ে জাতীয় পর্যায়ে একটি কমিটি গঠন করা হয় যারা ইতোমধ্যে তাঁদের অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে জাতীয় পর্যায়ে গাইডলাইন প্রণয়নের কাজ শেষ করেছেন এবং প্রণীত গাইডলাইনটি অনুমোদনের জন্য বিদ্যুৎ বিভাগে প্রেরণ করা হয়েছে। উক্ত গাইডলাইন প্রণীত হলে বাংলাদেশে বায়োগ্যাসের বাণিজ্যিক প্রসার এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সমস্যাসমূহ অনেকাংশে হ্রাস পাবে।
স্রেডা’র তত্ত্বাবধানে স্রেপজেন প্রকল্পের আওতায় “Comprehensive assessment of biomass fuels for power generation” বিষয়ক একটি স্ট্যাডি সম্পন্ন হয়েছে। অতিশীঘ্রই যাচায়ন্তে তা বিদ্যুৎ বিভাগে প্রেরণ করা হবে।